ওয়েব ডেস্ক: নির্বাচন কমিশন সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে যে চিঠি দিয়েছে তা অসাংবিধানিক ও নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারবহির্ভূত বলে মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তারা বলেন, মূলত সরকার নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে এই চিঠির ব্যবস্থা করেছে।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন।
নেতারা বলেন, আমরা দেখলাম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চিঠি আসা মাত্রই তা কার্যকর করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। ফলে এটা স্পষ্টই প্রমাণিত যে, নির্বাচন কমিশন বাস্তবতায় কেবল সরকারের হুকুম বরদারে পরিণত হয়েছে।
তারা আরও বলেন, সরকার এরই মধ্যে মানুষের কণ্ঠরোধ করে একটি তথাকথিত নির্বাচন করতে চাইছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়ে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে ভয় দেখিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে এই তামাশা মঞ্চস্থ করতে চাইছে। একদিকে এই সর্বাত্মক দমন-পীড়ন এবং এখন সভা সমাবেশকেও বন্ধ করার উদ্যোগ, এর মাধ্যমে সরকার নিজেরা সরাসরি ঘোষণা না করলেও কার্যত জরুরি অবস্থা জারি করেছে।
নেতারা বলেন, এই নিষেধাজ্ঞা জনগণ মানবে না। এই নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কোনোভাবেই বৈতরণী পার হওয়া যাবে না। সব বাধা অতিক্রম করে, ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতন্ত্রের বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। সেই লক্ষ্যে আন্দোলন জোরদার করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
এসময় গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ব্যারিস্টার শাহজান ওমর আওয়ামী লীগকে তার সব গোমর ফাঁস করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগকে নগ্ন করে মাঠে ছেড়ে দিয়েছেন। স্বৈরাচারীদের মতো কিংস পার্টি বানানো, গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে, টাকা-পয়সা দিয়ে তারা বিভিন্ন দল বানায়। এমন এক দল বানিয়েছে যেখানে চেয়ারম্যানের পদ খালি। এই চেয়ারম্যানের পদের জন্য বিএনপি থেকে এক নেতাকে নিয়ে আসা হবে। সেজন্য এই পদ খালি রেখে দেওয়া হয়েছে। নমিনেশন জমা দেওয়া পর্যন্ত দেখা গেলো ওই পদে আর লোক পূরণ করা যায়নি। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগ। তারা তামাশার পর তামাশা করতে থাকলো।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি’র সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপনের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল উদ্দিন মজুমদার সাজুর পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার। জেএসডি’র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট কে এম জাবির, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন এবং নাগরিক ঐক্যের দপ্তর সম্পাদক মুহিদুজ্জামান মুহিদ।